পাকিস্তান-চীন ২.৯ বিলিয়ন ইউয়ানের স্যাটেলাইট চুক্তি: বেসামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে নতুন দিগন্ত

DSF NEWS DESKreport:  কিস্তান এবং চীনের মধ্যে একটি যুগান্তকারী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মাধ্যমে পাকিস্তান তার স্যাটেলাইট প্রযুক্তির ক্ষমতা বাড়াতে যাচ্ছে। চীনের শীর্ষস্থানীয় মহাকাশ প্রযুক্তি সংস্থা পাইস্যাট (PIESAT) এবং পাকিস্তানের মধ্যে এই ২.৯ বিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যের চুক্তিটি ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে চূড়ান্ত হয়। এই চুক্তি পাকিস্তানের বেসামরিক এবং প্রতিরক্ষা খাতে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির ব্যবহারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC)-এর আওতায় এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে মহাকাশ সহযোগিতার একটি নতুন অধ্যায় শুরু করেছে। এটি পাকিস্তানকে একটি স্বনির্ভর স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করবে, যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ পর্যবেক্ষণ এবং টেলিকমিউনিকেশনের মতো বেসামরিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া, প্রতিরক্ষা খাতে এই প্রযুক্তি পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই চুক্তিকে “পাকিস্তানের মহাকাশ খাতে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “চীনের সাথে এই অংশীদারিত্ব আমাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে এবং উভয় দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।” এর আগে পাইস্যাট পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে স্মার্ট কৃষি প্রকল্পের জন্য ২০০ মিলিয়ন ইউয়ানের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, যা এই সহযোগিতার ধারাবাহিকতার প্রমাণ।

পাকিস্তানের স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশন (SUPARCO) এবং চীনের মহাকাশ সংস্থা চায়না অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কর্পোরেশন (CASC) দীর্ঘদিন ধরে সহযোগিতা করে আসছে। এই চুক্তির ফলে পাকিস্তান চীনের টিয়াঙ্গং স্পেস স্টেশনে প্রথম পাকিস্তানি মহাকাশচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এছাড়া, পাকিস্তানে একটি অত্যাধুনিক স্পেস সেন্টার স্থাপনের কাজও এগিয়ে যাবে, যা গবেষণা এবং স্যাটেলাইট প্রযুক্তির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার মহাকাশ প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। এটি কেবল প্রতিরক্ষা খাতেই নয়, বেসামরিক উন্নয়নেও নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। চীন-পাকিস্তানের এই যৌথ উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *