Blog

  • মানবতার বার্তা ছড়িয়ে বিশ্ব লায়ন্স সার্ভিস মাসে জেলা ৩১৫ বি১-এর গ্র্যান্ড র‍্যালি

    মানবতার বার্তা ছড়িয়ে বিশ্ব লায়ন্স সার্ভিস মাসে জেলা ৩১৫ বি১-এর গ্র্যান্ড র‍্যালি

    স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকার আগারগাঁও গত শুক্রবার সকাল থেকেই ভিন্ন এক পরিবেশে মুখরিত ছিল। লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল জেলা ৩১৫ বি১-এর উদ্যোগে বিশ্ব লায়ন্স সার্ভিস মাস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য গ্র্যান্ড র‍্যালি এলাকাজুড়ে এক উৎসবমুখর আবহ তৈরি করে।

    রঙিন ব্যানার, ক্লাবভিত্তিক সজ্জা, সামাজিক বার্তা ও মানবসেবার চেতনায় অনুপ্রাণিত র‍্যালিটি সাধারণ মানুষেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

    মোট ৫০০–এরও বেশি লায়ন ও লিও সদস্য এই র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন, যা লায়নিজমের শক্তিশালী উপস্থিতি এবং সামাজিক সেবা কার্যক্রমে তাদের অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ়ভাবে তুলে ধরে। প্রতিটি ক্লাব তাদের নিজস্ব স্টাইল এবং স্বতন্ত্র উপস্থিতি দিয়ে র‍্যালিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।

    জেলা গভর্নর লায়ন ড. এ. কে. এম. সারোয়ার জাহান জামিল এমজেএফ র‍্যালির নেতৃত্ব দেন। তার পাশাপাশি ছিলেন জেলা ফার্স্ট লেডি লায়ন রোজিনা শাহীন মুনা, ফার্স্ট ভাইস ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর লায়ন ড. খন্দকার মাজারুল আনোয়ার এমজেএফ, সেকেন্ড ভাইস ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর লায়ন রফিকুল বারী এমজেএফ, পাস্ট ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর হেলেন আক্তার নাসরিন পিএমজেএফ, এবং আরও অনেকে।

    গ্র্যান্ড র‍্যালিটি পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধান করেন কমিটির চেয়ারপার্সন লায়ন শিরিন আখতার রুবি। তার সাথে ছিলেন সেক্রেটারি লায়ন মামুন আহাম্মদ, ট্রেজারার লায়ন আনোয়ার হোসেন, জয়েন্ট সেক্রেটারি লায়ন নাসিমা আলম, জয়েন্ট ট্রেজারার লায়ন ইয়াসরিব হাসান, এবং লিও জেলা সভাপতি লিও অরিত্র রহমান।

    র‍্যালিটি ৫০টির বেশি মোটরযান নিয়ে আগারগাঁওয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মানুষের ভিড়, উচ্ছ্বাস, মাইকিং এবং থিমেটিক ব্যানারের সমন্বয় র‍্যালিকে আকর্ষণীয় করে তোলে। মানবতার প্রতি অঙ্গীকার, সেবার প্রতি নিষ্ঠা এবং নেতৃত্ব গঠনে লায়ন্স ক্লাবের ভূমিকা এ র‍্যালির মধ্য দিয়ে আরও স্পষ্ট হয়।

    র‍্যালির শেষে লায়ন্স ভবনে সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জেলা গভর্নর অংশগ্রহণকারী সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, “যেখানে মানুষ আছে, সেখানে সেবা আছে—এটাই লায়নিজমের চেতনা।”

    অনুষ্ঠান শেষে পরিবেশিত হয় প্রাতঃরাশ এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ মেলামেশা। লায়ন ও লিও সদস্যরা জানান যে এই র‍্যালি তাদের আত্মবিশ্বাস, ঐক্য এবং সেবাবোধকে আরও উজ্জীবিত করেছে।

  • European Leaders Rally in Kyiv Amid Trump’s Ultimatum – Heightened Security Blankets Capital as Zelensky Faces ‘Make-or-Break’ Peace Push

    European Leaders Rally in Kyiv Amid Trump’s Ultimatum – Heightened Security Blankets Capital as Zelensky Faces ‘Make-or-Break’ Peace Push

    Dsf news Exclusive Report– November 22, 2025: In a dramatic show of transatlantic solidarity, preliminary intelligence sources reveal that several top European leaders are preparing an unannounced emergency dash to Kyiv tomorrow, November 23, as Ukrainian President Volodymyr Zelenskyy grapples with mounting pressure from U.S. President Donald Trump’s controversial 28-point peace proposal. The move comes just hours after Kyiv police announced sweeping heightened security measures across the capital, citing “elevated threats” amid escalating Russian airstrikes and the high-profile influx of dignitaries.

    This exclusive dispatch, pieced together from high-level diplomatic whispers, on-the-ground intelligence, and intercepted communications, paints a picture of a city on edge – barricades rising, checkpoints multiplying, and air raid sirens on standby – as Europe races to shield its embattled ally from what insiders call a “Trump trap.” The proposal, leaked earlier this week and reportedly drafted in secret consultations between Washington and Moscow without Kyiv’s input, demands Ukraine cede Crimea, recognize Russian control over Donbas, cap its military at 600,000 troops, and forgo NATO ambitions in exchange for frozen Russian assets and vague “security guarantees.” Zelenskyy, in a rare moment of candor during closed-door talks with U.S. Army Secretary Christine Wormuth on Thursday, described it as “absurd and unacceptable,” warning it would betray Ukraine’s sovereignty at a time when Russian forces are pounding the energy grid and civilian casualties mount.

    Kyiv’s police chief, Andriy Nebitov, broke the news of the security lockdown in a terse evening briefing: “Effective immediately and intensifying tomorrow, we are implementing enhanced patrols, drone surveillance, and restricted access zones across key districts, including government buildings, Maidan Nezalezhnosti, and transport hubs. This is in response to credible intelligence on potential sabotage and aerial threats.” Sources close to the matter tell us the measures include deploying elite SBU counterintelligence units and even temporary no-fly zones over the city center – a precaution not seen since the early days of the 2022 invasion. Residents are urged to carry ID at all times, avoid large gatherings, and heed air raid alerts, with metro stations on heightened alert following recent petitions for “panic buttons” and bag checks. One anonymous officer quipped to our team: “We’re not just protecting leaders; we’re protecting hope. If this visit flops, so does the front line.”

    The European cavalcade – expected to include French President Emmanuel Macron, German Chancellor Friedrich Merz, UK Prime Minister Keir Starmer, and Polish Prime Minister Donald Tusk – is billed as a “coalition of the resolute,” echoing their May 2025 Kyiv summit where they issued a 30-day ceasefire ultimatum to Putin, backed by Trump himself at the time. Diplomatic cables obtained exclusively by our sources indicate the agenda: a dawn arrival at Boryspil Airport under military escort, a wreath-laying at the Memorial Wall for fallen heroes, closed-door strategy sessions at the Mariinsky Palace, and a joint presser with Zelenskyy. Their message? Unwavering support for Ukraine’s “just peace” – one that respects sovereignty, involves Europeans in any guarantees, and rejects concessions that reward aggression. “Without Ukraine at the table, there’s no deal,” one senior EU official texted en route, blasting the Trump plan as a “unilateral ambush” that sidelines Brussels and risks fracturing NATO.

    Behind the pomp lies raw geopolitics. Trump’s Thanksgiving deadline – just days away – has Kyiv in a vise: accept the deal and risk national dignity, or defy it and lose America’s “key partnership,” as Zelenskyy put it in a fiery Telegram post. The proposal’s architect, U.S. National Security Advisor Marco Rubio, has publicly mused about “concessions from both sides,” but European pushback is fierce. French Foreign Minister Jean-Noel Barrot declared in Brussels: “A durable peace can’t be questioned by future invasions – Ukrainians and Europeans must be on board.” Meanwhile, Russian President Vladimir Putin, feigning openness, called the plan a “basis for settlement” but reiterated advances in Pokrovsk and Kupiansk as leverage.

    On Kyiv’s streets, the mood is defiant yet weary. Amid blackouts from recent strikes – including the July assault on Okhmatdyt children’s hospital that killed nine – locals whisper of betrayal. A young mother near St. Sophia’s Cathedral told us: “Europe coming? Good. But if they let Trump sell us out, we’ll fight alone.” As barricades go up tonight, the question hangs: Will this visit steel Zelenskyy’s spine, or seal Ukraine’s fate? Our team is embedded – updates as they break.

  • জাপানের টোকিওতে ওয়েসকা ইন্টারন্যাশনাল  বোর্ড মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন : অরিত্র রহমান

    জাপানের টোকিওতে ওয়েসকা ইন্টারন্যাশনাল বোর্ড মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন : অরিত্র রহমান

    স্টাফ রিপোর্টার: ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫বি১ এর লিও জেলা সভাপতি, বাংলাদেশ এবং ওয়েসকা বাংলাদেশ ইয়ুথ চ্যাপ্টার ভাইস প্রেসিডেন্ট অরিত্র রহমান ২০২৫ সালের ১৫ অক্টোবর জাপানের টোকিওতে ওয়েসকা ইন্টারন্যাশনাল বোর্ডের মিটিং এ অংশগ্রহণ করবেন।

    তিনি বিশ্বের ৪১টি দেশে গ্রামীণ উন্নয়ন, পরিবেশ পুনরুদ্ধার এবং ক্ষমতা গঠনের জন্য কাজ করে এমন জাপান ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল এনজিও ওয়েসকা ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী ৭ জন প্রতিনিধি দলের সাথে যোগদান করছেন।

    প্রতিনিধি দলটি ওয়েসকা ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্তন পরিচালক বেঞ্জির আহমেদ, ওয়েসকা বাংলাদেশের পরিচালক কে এম ইকতিয়ার জামান, ওয়েসকা বাংলাদেশ ন্যাশনাল চেপ্টার সভাপতি মিসেস হেলেন আখতার নাসরিন, মহাসচিব মিসেস খালেদা জাহান এবং প্রেসিডেন্ট ওয়েসকা বাংলাদেশ ইয়ুথ চেপ্টার তাসফিয়া আহমেদ।

    প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশ ন্যাশনাল চেপ্টার এর নতুন প্রকল্প লক্ষ্য এবং কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করা। অরিত্র রহমান তার প্রতিনিধি দলের সাথে ২১ অক্টোবর, ২০২৫ পর্যন্ত টোকিওতে থাকবে। আমরা প্রতিনিধি দল এবং সমস্ত সদস্যদের সাফল্য কামনা করি।

  • লালবাগে ব্যাংক কর্মকর্তার নৃশংস হত্যাকাণ্ড: স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

    লালবাগে ব্যাংক কর্মকর্তার নৃশংস হত্যাকাণ্ড: স্ত্রী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

    পুরান ঢাকার লালবাগ থানাধীন আরএনডি রোডের সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন জমজম মদিনা টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় একটি ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তি নজরুল ইসলাম (৪০), একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, যিনি খুলনার আরংঘাটা থানার তেলিগাতী এলাকার মৃত নবাব আলীর পুত্র। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই নৃশংস ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার পর রাতে লালবাগ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

    নিহতের বড় ভাই নুরুল ইসলামের অভিযোগ, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তিনি জানান, নজরুল ইসলাম লালবাগে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। ঢাকায় বদলির পর তিনি স্ত্রী শারমিন ওরফে নোভা, দুই সন্তান ও শাশুড়ির সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। তিন মাস পূর্বে নজরুলের মা ওই বাসায় এসে থাকা শুরু করেন, যা নিয়ে পারিবারিক কলহের সূত্রপাত হয়। নুরুল দাবি করেন, শুক্রবার বিকেলে নজরুলের স্ত্রী শারমিন তার রুমে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে ধারালো বঁটি দিয়ে নজরুলের ওপর আক্রমণ করেন। গুরুতর আহত নজরুল কোনোক্রমে দরজা খুলে মায়ের কাছে সাহায্য চাইতে গেলে তার গলা ও দুই হাতে একাধিক কোপের চিহ্ন স্পষ্ট হয়।

    নুরুল ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, এই হত্যাকাণ্ডে নজরুলের শাশুড়িরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তিনি এটিকে একটি সুনির্দিষ্ট ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে এই নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে।

    লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে পারিবারিক কলহকে এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী শারমিন ও শাশুড়ি পলাতক রয়েছেন। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

    এই ঘটনা পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের পূর্ণাঙ্গ রহস্য উন্মোচনের জন্য তদন্ত ত্বরান্বিত করেছে।

  • মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তেল আবিব সফরের সময় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের মিসাইল ও ড্রোন হামলা

    মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তেল আবিব সফরের সময় ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের মিসাইল ও ড্রোন হামলা

    ডিএসএফ রিপোর্ট: ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী “আনসার উল্লাহ” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের তেল আবিব সফরের সময় ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং অস্ত্রবহনকারী ড্রোন হামলা চালিয়েছে। হামলাটি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার ভোরে তেল আবিবের জাফা এলাকায় সংঘটিত হয়, যা ইসরায়েলের অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। হুথিরা দাবি করেছে, এটি “গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে” চালানো হয়েছে এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে “স্বাগত” জানানোর উদ্দেশ্যে।

    হুথি সামরিক কার্যক্রমের কথামানা ইয়াহিয়া সারিয়া-র বক্তব্যে বলা হয়েছে, “ইয়েমেনের মিসাইল বাহিনী ‘প্যালেস্টাইন-২’ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করে জাফা (তেল আবিব) এলাকার কয়েকটি সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এই অপারেশন সফলভাবে তার উদ্দেশ্য অর্জন করেছে।” হামলায় একাধিক ওয়ারহেডযুক্ত মিসাইল এবং ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

    ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা মিসাইলটি ইসরায়েলি আকাশসীমার বাইরে আটকিয়েছে, কিন্তু আকাশসীমান্তরে সাইরেন বাজিয়ে জনগণকে আশ্রয়স্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

    হামলার সময় তেল আবিবের জাফা এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং কয়েকটি ভবনের জানালা ভেঙে পড়ে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে কোনো মৃত্যুর খবর নেই, তবে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আরো’ এবং ‘ডেভিড’ স্লিঙ্গ’ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করে হামলা প্রতিহত করেছে। এই হামলা গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে হুথিদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পঞ্চম পর্যায়ের অভিযানের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

    মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের তেল আবিব সফরটি গাজা যুদ্ধে শান্তি প্রক্রিয়া এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনার জন্য। তিনি ইসরায়েলি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন যখন হামলাটি সংঘটিত হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই হামলাকে “আতঙ্কবাদী কর্মকাণ্ড” বলে অভিহিত করে এবং ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্র এই অপ্রয়োজনীয় হামলার নিন্দা করে এবং ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার সমর্থন করে।”

    হুথিরা গত অক্টোবর থেকে গাজা যুদ্ধের সমর্থনে ইসরায়েল এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্ররাষ্ট্রগুলো ইয়েমেনে বারবার বিমান হামলা চালিয়েছে। এই সর্বশেষ হামলা আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কা জাগিয়েছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর অফিস জানিয়েছে, এর জবাবে ইয়েমেনের হুথি লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানো হবে।

  • গাজার গণহত্যা রুখতে ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জয়: জাতিসংঘে ঐতিহাসিক ভোটে ১৪২ পক্ষে, বিপক্ষে ১০

    গাজার গণহত্যা রুখতে ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জয়: জাতিসংঘে ঐতিহাসিক ভোটে ১৪২ পক্ষে, বিপক্ষে ১০

    দেস্ক রিপোর্টঃ বিশ্বের দৃষ্টি আজ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (UNGA) দিকে ছিল, যেখানে একটি যুগান্তকারী রেজোলিউশন পাস হয়েছে। এই রেজোলিউশন গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান, হামাস-মুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শক্তিশালী আহ্বান জানিয়েছে। “নিউ ইয়র্ক ডিক্লারেশন” নামে পরিচিত এই রেজোলিউশনটি ১৪২টি দেশের সমর্থনে জয়ী হয়েছে, মাত্র ১০টি দেশ বিরোধিতা করেছে এবং ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। এই ভোট ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের সমাধানে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এটিকে তীব্র সমালোচনা করেছে।

    ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘে ১৪২টি দেশ এই রেজোলিউশনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনের একটি শক্তিশালী বার্তা। বিরোধিতাকারীদের মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, এবং কয়েকটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র। ১২টি দেশ, যার মধ্যে কিছু ইউরোপীয় রাষ্ট্র, ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। এই ভোটের আগে গাজার মানবিক সংকট নিয়ে তীব্র আলোচনা হয়, এবং এটি ২২ সেপ্টেম্বরের উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনের পথ প্রশস্ত করেছে, যেখানে যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে বলে ঘোষণা করেছে।
    রেজোলিউশনটি গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, হামাসের অস্ত্র ত্যাগ এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য “সুনির্দিষ্ট ও সময়োপযোগী” পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। এটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার নিন্দা করেছে এবং সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি পর্যবেক্ষক রিয়াদ মনসুর আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “এটি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ন্যায়ের প্রথম ধাপ, একটি আশার আলো!”

    বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “গাজায় যা ঘটছে তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এই রেজোলিউশন শান্তি ও ন্যায়ের পথে একটি বড় পদক্ষেপ।” চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং আরব লীগের দেশগুলো ফিলিস্তিনের পক্ষে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি মর্গান ওর্তাগুস এই রেজোলিউশনকে “হামাসের জন্য উপহার” বলে কটাক্ষ করেছেন, যখন ইসরায়েল এটিকে “একতরফা ও বিপজ্জনক” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল বারোট বলেন, “এই রেজোলিউশন হামাসকে বিশ্ব মঞ্চে বিচ্ছিন্ন করেছে এবং শান্তির পথে একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।” যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ফ্রান্স ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, তবে এটি গাজার পরিস্থিতির উন্নতির উপর নির্ভর করবে।

    এই রেজোলিউশন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে গাজায় একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক মিশন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে, যা মানবিক সাহায্য ও পুনর্গঠন তদারকি করবে। সেপ্টেম্বর ১৭-এর মধ্যে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব শেষ করার দাবি জানানো হবে, এবং ২২ সেপ্টেম্বরের সম্মেলনে আরও দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে। বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিন-সমর্থকরা এই ভোটকে “গণহত্যার বিরুদ্ধে জয়” হিসেবে উদযাপন করছে।

  • কাতারের কঠোর হুঁশিয়ারি: আমেরিকার সাহায্য না পেলে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা বন্ধ করে দিবে

    কাতারের কঠোর হুঁশিয়ারি: আমেরিকার সাহায্য না পেলে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা বন্ধ করে দিবে

    ডেস্ক রিপর্টঃ কাতার সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কড়া বার্তা দিয়েছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর দেশটি বলছে, যদি আমেরিকা তাদের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে এক্সনমোবিলের মতো মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করবে কাতার। এই হুমকি এসেছে গত সপ্তাহে ডোহায় হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলি হামলার পর।

    কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানি বলেন, “আমরা শান্তি চাই, কিন্তু আমাদের মর্যাদা নিয়ে কেউ খেললে চুপ থাকব না।” তিনি জানান, মার্কিন সরকার যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কাতারকে সমর্থন না দেয়, তাহলে গোল্ডেন পাস এলএনজি প্রকল্প থেকে শুরু করে সব ধরনের বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে। এই প্রকল্পে এক্সনমোবিলের সঙ্গে কাতার এনার্জির বিশাল অংশীদারিত্ব রয়েছে।

    এই ঘোষণার পর থেকে বিশ্ববাজারে তেল-গ্যাসের দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। কাতার বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ শক্তি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও সরাসরি সামরিক সহায়তার কথা এখনো বলেননি।

    এদিকে, জাতিসংঘ হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। তবে কাতারের এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন জটিলতা যোগ করেছে। স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি কেবল ব্যবসায়িক হুমকি নয়, বরং কাতারের কৌশলগত অবস্থান জানান দেওয়ার একটি পদক্ষেপ।

  • চীনের ঘোষণা: যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে তাদের দমন বা নিয়ন্ত্রণ করা ‘পুরোপুরি অসম্ভব

    চীনের ঘোষণা: যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে তাদের দমন বা নিয়ন্ত্রণ করা ‘পুরোপুরি অসম্ভব

    চিন সম্প্রতি একটি শক্তিশালী বিবৃতি দিয়ে বিশ্ব মঞ্চে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে চীনের উত্থানকে দমন বা নিয়ন্ত্রণ করা ‘পুরোপুরি অসম্ভব’। এই ঘোষণা এসেছে এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বের দুই পরাশক্তির মধ্যে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং সামরিক প্রতিযোগিতা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে।

    চীনের আত্মবিশ্বাসের পেছনে কী?

    চীনের এই দৃঢ় অবস্থানের পেছনে রয়েছে তাদের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি, উন্নত প্রযুক্তি, এবং শক্তিশালী সামরিক সক্ষমতা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে চীন গত কয়েক দশকে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ, ৫জি প্রযুক্তির প্রসার, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ তাদের আত্মবিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছে।

    চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “আমাদের উন্নয়ন এবং অগ্রগতি কোনো বাহ্যিক শক্তি দ্বারা বাধাগ্রস্ত হতে পারে না। আমরা শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে রয়েছি, তবে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস করব না।”

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া

    যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই বিবৃতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘোষণা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। বাণিজ্য যুদ্ধ, দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক উপস্থিতি, এবং তাইওয়ান ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

    বিশ্বব্যাপী প্রভাব

    চীনের এই ঘোষণা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেই নয়, বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, এশিয়া, আফ্রিকা, এবং ইউরোপের দেশগুলো এই পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারে।

    বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট

    বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। চীন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী, এবং তাদের বিনিয়োগ ও প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। ফলে, এই দুই পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক কৌশলের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

    চীনের এই ঘোষণা বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। এটি কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণ করবে না, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতি ও ক্ষমতার ভারসাম্যকেও প্রভাবিত করবে। পরিস্থিতি কীভাবে এগোয়, তা নির্ভর করছে আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের কূটনৈতিক পদক্ষেপের উপর।

  • ইসরায়েলের কাতার হামলা: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের তীব্র নিন্দা, হামাসের লড়াইয়ের প্রত্যাশা অটুট

    ইসরায়েলের কাতার হামলা: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের তীব্র নিন্দা, হামাসের লড়াইয়ের প্রত্যাশা অটুট

    ডিএসএফ নিউজ ডেস্করিপোর্টঃ মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের কারণে। কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হামলা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাঙ্গা করে তুলেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা এই হামলাকে কড়া ভাষায় নিন্দা করে বলেছেন যে এটি কাতারের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং গাজায় চলমান যুদ্ধের শান্তি প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করেছে। এদিকে, হামাস সংগঠন জানিয়েছে, তারা লড়াই চালিয়ে যাবে এবং তাদের মূল দাবিগুলো—যেমন গাজার সম্পূর্ণ সামরিক প্রত্যাহার, বন্দীদের মুক্তি এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি—যে কোনোভাবেই পরিবর্তন হবে না। তারা ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধকে ‘গণহত্যামূলক’ বলে অভিহিত করেছে।

    ঘটনার পটভূমি: দোহায় হামলার বিবরণ

    গত ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাতারের দোহার ওয়েস্ট বে ল্যাগুন এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। স্থানীয় সাক্ষীরা বলছেন, ধোঁয়ার স্তম্ভ উঠে আকাশ ছুঁয়েছে এবং কয়েকটি আবাসিক ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, এটি ছিল একটি ‘সুনির্দিষ্ট অভিযান’ যাতে হামাসের রাজনৈতিক শাখার শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করা হয়েছে। মূল লক্ষ্য ছিলেন খলিল আল-হায়্যা, হামাসের গাজা-ভিত্তিক প্রধান নেতা এবং জাহের জাবারিন, পশ্চিম তীরের নেতা। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই নেতারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার সূত্রপাতকারী, যাতে ইসরায়েলে হাজারো মানুষ নিহত হয়। তিনি এই অভিযানকে ‘সম্পূর্ণ স্বাধীন’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এটি হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অধিকারের অংশ।

    হামাসের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযানের সময় তারা মার্কিন মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছিল। সংগঠনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “এটি ছিল সম্পূর্ণ আলোচনা প্রক্রিয়ার উপর হামলা।” হামাস নিশ্চিত করেছে যে তাদের শীর্ষ নেতারা অক্ষত আছেন, কিন্তু ছয়জন মারা গেছেন—যাদের মধ্যে খলিল আল-হায়্যার ছেলে এবং তার অফিসের পরিচালক অন্তর্ভুক্ত। কাতার সরকার জানিয়েছে, হামলায় একজন তাদের নিরাপত্তা কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন। এই ঘটনা কাতারকে বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ করেছে, কারণ দেশটি গাজা যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পরিচিত এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর বৃহত্তম ঘাঁটি আল উদেয়দ এখানে অবস্থিত।

     

    জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া: সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন

    জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ১১ সেপ্টেম্বর একটি জরুরি বৈঠকে এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা করে। ১৫ সদস্যের ঐকমত্যে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে, যাতে ইসরায়েলের হামলাকে ‘কাতারের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। যদিও বিবৃতিতে ইসরায়েলের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, কিন্তু এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনেও গৃহীত হয়েছে, যা ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “সকল পক্ষকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দিকে কাজ করতে হবে, না যে এটি ধ্বংস করতে। কাতারের শান্তি প্রচেষ্টা অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।”

    কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানি বৈঠকে অংশ নিয়ে বলেছেন, এই হামলা আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলাকে চ্যালেঞ্জ করেছে এবং তারা তাদের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকায় অটল থাকবে। পরিষদের নির্বাচিত সদস্য আলজেরিয়া, পাকিস্তান এবং সোমালিয়া এই বৈঠকের অনুরোধ করেছিল। পাকিস্তানের প্রতিনিধি বলেছেন, “শুধু নিন্দা নয়, ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে হবে।” এছাড়া, আরব লীগ, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা এবং গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিলও এই হামলাকে ‘অবৈধ আগ্রাসন’ বলে নিন্দা করেছে।

    হামাসের অবস্থান: লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

    হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সুহাইল আল-হিন্দি বলেছেন, “আমাদের নেতারা অক্ষত, কিন্তু এই হামলা ইসরায়েলের শান্তি চাওয়ার অভাব প্রমাণ করে।” সংগঠন জানিয়েছে, তারা মার্কিন প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো—যেমন ৬০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি, বন্দী বিনিময় এবং গাজায় মানবিক সাহায্য—আলোচনা করছিল। কিন্তু তারা তাদের মূল দাবিগুলোতে অটল: ইসরায়েলের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, গাজার পুনর্নির্মাণ এবং স্থায়ী শান্তি। হামাসের মিডিয়া অফিসের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতা বলেছেন, “ইসরায়েলের এই গণহত্যামূলক যুদ্ধ আমাদের দৃঢ়তা বাড়িয়েছে। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব যতক্ষণ না আমাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়।”

    গাজায় চলমান যুদ্ধে এর মধ্যে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যার বেশিরভাগ নিরীহ নাগরিক। হামাসের দাবি, ইসরায়েলের অভিযান গাজাকে ধ্বংস করছে এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।

    আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এবং ভবিষ্যতের উদ্বেগ

    এই হামলা শুধু কাতারকেই নয়, সমগ্র অঞ্চলকে প্রভাবিত করেছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরের মতো দেশগুলো কাতারের সাথে সংহতি জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “আমি এই হামলা নিয়ে অসন্তুষ্ট,” এবং এটি শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার এবং কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীও নিন্দা করেছেন।

    জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক উপ-সচিব রোজমেরি ডিকার্লো বলেছেন, এটি ‘অন্যায়কর উত্তেজনা’ যা গাজায় বন্দী মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাকে বিপন্ন করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘাতের সূচনা করতে পারে, বিশেষ করে যখন কাতার যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

    ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট ইসাক হার্জোগ বলেছেন,

    “কখনও কখনও এমন লোকদের অপসারণ করা দরকার যারা চুক্তি করতে চায় না।” কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার সাথে সাথে, এই সংকটের সমাধান কতটা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গাজায় শান্তি প্রক্রিয়া এখন আরও জটিল হয়ে পড়েছে, এবং বিশ্বের নজর এখন জাতিসংঘের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

  • ইউএস-ভারত বাণিজ্য চুক্তি: রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধ না করলে ‘সর্ট আউট’ হবে না, বললেন শীর্ষ আমেরিকান কর্মকর্তা

    ইউএস-ভারত বাণিজ্য চুক্তি: রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধ না করলে ‘সর্ট আউট’ হবে না, বললেন শীর্ষ আমেরিকান কর্মকর্তা

    ওয়াশিংটন: যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সাম্প্রতিক মন্তব্য ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে নতুন মোড় এনেছে। তিনি বলেছেন, ভারত রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধ করলে এবং তার বাজার খুলে দিলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি ‘সর্ট আউট’ করা যাবে। এই কথা বলা হয়েছে সিএনবিসি-র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারতের তেল আমদানি নিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।

    লুটনিকের বক্তব্য অনুসারে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে ভারত তার তেলের মাত্র ১ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করত। কিন্তু এখন সেই পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ান তেল সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে, যা ভারত কিনে রিফাইন করে বিশ্বব্যাপী বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এতে ‘ননসেন্স’ বলেছেন এবং বলেছেন যে এসব বন্ধ করতে হবে। ভারতের সঙ্গে চুক্তি হবে যখন তারা রাশিয়ান তেল কেনা বন্ধ করবে,” লুটনিক যোগ করেছেন।

    এই মন্তব্যটি এসেছে ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের পর। গত আগস্ট মাসে আমেরিকা ভারতীয় আমদানির উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করেছে, যা রাশিয়ান তেল কেনার জন্য শাস্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এরপর ট্রাম্প ৫০ শতাংশ ট্যারিফের হুমকি দিয়েছেন। এই ট্যারিফগুলো ভারতের জন্য বড় ধাক্কা, কারণ ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ এবং রাশিয়া তার প্রধান সরবরাহকারী।

    ভারত সরকার এই চাপের মুখে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “এটা অন্যায় এবং অযৌক্তিক” এবং ভারত যেকোনো উৎস থেকে সেরা দরে তেল কিনবে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও জানিয়েছেন যে, রাশিয়ান তেল কেনা চালিয়ে যাবে কারণ এটা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, এই আমদানি বিশ্বব্যাপী তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করছে।

    যদিও ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো—ট্রাম্প মোদিকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলেছেন—কিন্তু বাণিজ্যিক চাপ অব্যাহত। লুটনিক আগের সপ্তাহে বলেছিলেন যে, ভারত এক-দুই মাসের মধ্যে ক্ষমা চেয়ে আলোচনাতে ফিরবে। ভারতীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পিয়ূষ গোয়েল বলেছেন, নভেম্বরের মধ্যে প্রথম ধাপের চুক্তি হতে পারে।

    এই ঘটনা ভারতের অ-পক্ষপাতী নীতিকে চ্যালেঞ্জ করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারত রাশিয়ান তেল কমাতে পারে কিন্তু সম্পূর্ণ বন্ধ করবে না, কারণ এতে তার অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে। আমেরিকার চাপ কি ভারতকে বাধ্য করবে, নাকি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন সংকট তৈরি করবে? এটাই এখন প্রশ্ন।